আখিরাত শব্দের অর্থ কি | আখিরাতের ধারনা

আখিরাতের বর্ণনা

আখিরাত শব্দের অর্থ কি | আখিরাতের ধারনা


আখিরাত শব্দের অর্থঃ

আখিরাত অর্থ- পরকাল। মৃত্যুর পরবর্তী জীবনকে আখিরাত বলা হয়। এ পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা আমাদের ওপর অত্যাবশ্যক। দুনিয়ার মানুষের সুখ-দুঃখের সীমা আছে এবং শেষও আছে; কিন্তু পরকাল অর্থাৎ আখিরাতের সুখ-শান্তি ও দুঃখ-কষ্টের কোনো সীমা নেই।

 এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় কেউই চিরস্থায়ী নয়। নির্দিষ্ট কিছুকাল বসবাস করার পর মৃত্যুবরণ করতে হবে। ইহজগতে যার জন্ম বা সৃষ্টি হয় তারই মরণ বা শেষ আছে। আমরা যে সমস্ত জিনিস সৃষ্টি হতে দেখি, আবার তারই অবসান হতে দেখি। এমনকি মানব জাতিকে দেখতে পাই যে, একদিন জন্ম নিলে অন্য দিন মরতে হয়। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন—

كل نفس ذائقة الموت .


উচ্চারণ : কুলু নাফসিন যাইকাতুল মাউত।


অর্থ : “প্রত্যেক জীবই মরণশীল।" মোটকথা, আল্লাহ তা'আলার সৃজিত ১৮ হাজার মাখলুকাতের মৃত্যু বা লয় অনিবার্য, তবে কেউ কেউ বা কোনো কোনো প্রাণী বেশিদিন ইহজগতে বেঁচে থাকে আবার কেউ কেউ বয়স অল্প হওয়াতেও শেষ হয়ে যায়। কিন্তু প্রত্যেকেই শেষ হয়ে যাবে, কেউ কিছুদিন আগে আবার কেউ কিছুদিন পরে।


অতএব এ পৃথিবীর সাধারণ নিয়মই হলো শেষ হয়ে যাওয়া। দুনিয়ার শেষ দিন হযরত ইসরাফীল (আ.)-এর যুৎকারে যাবতীয় জীব-জন্তু, পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী ইত্যাদি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। আল্লাহ তা'আলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেছেন—

يوم يخرجون من الأحداث سراعا كانهم إلى نصب يرفضون . خاشعة أبصارهم ترهقهم ذلة ج رهم ج ذلك اليوم الذي كانوا يوعدون


উচ্চারণ ও ইয়াওমা ইয়াররুজুনা মিনাল আজদাছি সিরা আন ক্যআন্নাহুম ইলা নুসুধিন ইউফিদুন। খাশিাত্মতান আবসারহুম তারহাকুহুম যিল্লাতুন; যালিকাল ইয়াওমুল্লাযী কানু ইউ আদূন।


অর্থঃ যে দিন তারা (মানব) কবর হতে দৌড়িয়ে বের হবে, যেন কোনো ইবাদতগাহের দিকে ছুটে যাচ্ছে, তাদের চক্ষু নিম্নমুখী হবে, লজ্জা তাদেরকে বেষ্টন করে নেবে। এটাই সেই ওয়াদাকৃত দিবস।


অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন –


وإن الذين لا يؤمنون بالأخرة أعتدنا لهم عذاباً إليها


 উচ্চারণ : ওয়া ইন্নাল্লাযীনা লা ইউ'মিনুনা বিল আখিরাতি আ'তাদনা লাহুম আযাবান আলীমা।


অর্থ ঃ যারা পরকাল বিশ্বাস করে না তাদের জন্য আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তৈরি করে রেখেছি।


আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেছেন—


إن الساعة ابية أكاد أخفيها لتجزى كل نفس بما تسعى


উচ্চারণ ঃ ইন্নাসসা'আতা আতিয়াতুন আকাদু উফীহা লিজ্যা কুলু নাফসিম বিমা তাস'আ।


অর্থ ঃ নিশ্চয়ই কিয়ামত আগমন করবে আর আমি তা গোপন রেখেছি লোকদের নিকট হতে, যাতে প্রত্যেকেই ফল ভোগ করে। (কারণ তারা কিয়ামতের বিষয় অজ্ঞ থেকে নেকী সঞ্চলা করতে থাকুক।)

আল্লাহ তা'আলা অন্য এক আয়াতে ইরশাদ করেছেন


الله الموتى ويريكم ايته لعلكم تعقلون كذلك يحي উচ্চারণ ঃ কাযালিকা ইয়ুহইল্লাহুল মাউতা ওয়া ইউরীকুম আইয়াতিহী লা'আল্লাকুম তাকিলুন।


অর্থঃ (আল্লাহ বলেন, হে নবী!) এভাবেই আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিবস মৃতদেরকে জীবিত করবেন আর তিনি এ বিষয়ে দুনিয়াতেই তোমাদেরকে নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করছেন, যাতে তোমরা উপলব্ধি করতে পারো যে, কিয়ামত নিশ্চয়ই অনিবার্য।

কিয়ামত সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা কুরআন মাজীদে সূরা হজের ১ ও ২ নং আয়াতে ইরশাদ করেন—


ياأيها الناس اتقوا ربكم ج إن زلزلـة الشـاعـة شي عظيم . يوم ترونها تذهل كل مرضعة عنا أرضعت وتضع كل ذات حمل حملها وترى الناس شكري وماهم شكري ولكن عذاب الله شديد.


উচ্চারণ ঃ ইয়া আইয়্যুহান্ নাসুত্ তাক্ রাব্বাকুম; ইন্না যাল্যালাতাস্ সা'আতে শাই'উন 'আযীম। ইওমা তারাওনাহা তাযহালু কুলু মুরদ্বি আতিন 'আম্মা আরদ্বা'আত ওয়া তাদ্বা উ কুল্লু যোতি হামলিন হামলাহা ওয়া তারান্ নাসা সুকারা ওয়ামা হুম বিসুকারা ওয়া লাকিন্না “আযাবাল্লাহি শাদীদ।


অর্থঃ হে মানবমণ্ডলী! স্বীয় প্রতিপালককে ভয় করো। নিশ্চয়ই কিয়ামতের কম্পন অতি ভীষণ ব্যাপার। যে দিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে সে দিনে সমস্ত স্তন্যদায়িনী মাতা তাদের স্তন্যপায়ী সন্তানকে ভুলে যাবে এবং সমস্ত গর্ভবতী মহিলা সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বেই নিজ নিজ গর্ভপাত করবে। আর আপনি [মুহাম্মদ (সা.)। মানুষদেরকে মাতালের ন্যায় দেখতে পাবেন অথচ তারা মাতাল হবে না। বস্তুত আল্লাহর আজাব বড়োই কঠোর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন